ব্যর্থ ভারত যেন এ যুগের নতুন দক্ষিণ আফ্রিকা | Failed India is like the new South Africa | South Africa | India | kaziariful.com 2022
সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর, ভারত ICCT-20 বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে। চ্যাম্পিয়নশিপের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। হারের অপমান শুষে শেষ রাউন্ডে আসার পর দেশ ছাড়তে হবে রোহিত-বিরাট-হার্দিকদের। ভারত ইতিমধ্যেই তিনবার আইসিসি ইভেন্টের ফাইনালে, চারবার সেমিফাইনালে এবং একবার গ্রুপ পর্বে হেরেছে। যা সত্যিই হতাশাব্যঞ্জনক বটে,তবে হারজিত খেলার একটি অংশমাত্র। ভারত যেমন প্রতিপক্ষকে যেভাবে ডমিনেন করে জিততে চাই তা মোটেই ভালো নয় বা ক্রিকেটভক্তকূলে শ্রদ্ধ্যা জায়গায়টা অনেক আগে তারা বঞ্চিত কাতারে রয়েছে। বাস্তবে তারাই কোনোভাবে স্বীকার করতে চাই না।
অনেকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে "চোকারস" বলা হতো। অনেকের দাবি, এবার সেই পদবী ধারণ করেছেন নতুন একজনের নাম উঠেছে, তাহল “ভারত”।
ভারত শেষবার ২০১৩ সালে একটি ICC প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করেছিল। সাম্প্রতিকতম ICC প্রতিযোগিতায়, ভারতকে ইংল্যান্ড পরাজিত করল, বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালে ভারত- ইংল্যান্ড নোকআউট পর্বে অঘোষিত ফাইনালের মুুখোমুখি হয় তাতে ভারত লজ্জাজনক হারের স্বাদ পায়।
ভারত ২০১৪ সালে T20 বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে বাদ পড়ে। চ্যাম্পিয়নশিপ খেলায় শ্রীলঙ্কা ভারতীয় দলকে পরাজিত করে। সেই সময়কার মহেন্দ্র সিং ধোনি ভারতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
ভারত শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ জিতেছিল। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা সেই আসরে হিসাব সুদে আসলে চুকিয়েছিল শ্রীলংঙ্কা। ২০ ওভারে ভারত সংগ্রহ মামুলি টাগেট ১৩০ রান। শ্রীলংঙ্কা রান তাড়া করে ১৮ ওভাবে আগে চূড়ান্ত জয়লাভ করে মালিঙ্গাদের দল।
বিগত চার বছর আগে শ্রীলংঙ্কা কাছে ভারত ধবলধোলাই খেয়েছিল ফাইনালে ফলাফল চ্যাম্পিয়ান। ভারত আবার ২০১৫ সালে আইসিসি বিশ্বকাপ হারার আরও একবার হারা স্বাদ অপমান অনুভব করে। ভারতীয় দল, যেটি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল, অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েছিল।
সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ৩২৯ রান করে। কিন্তু ২৩৩ রানে ভারত বিশ্বকাপের মঞ্চ শেষ করে।
ভারত ২০১৬ সালে ICC T20 বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল কিন্তু সেমিফাইনাল অতিক্রম করতে পারেনি। সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে যায় ভারতীয় দল।
সেমিফাইনালে, টিম ইন্ডিয়া প্রথমে ব্যাট করে ২ উইকেটে ১৯২ রান সংগ্রহ করে। রোহিত এবং রাহানে আউট হয়ে গেলেন এবং কোহলি তখন ম্যাচের দায়িত্ব নেন। ভারতীয় দল ১৯২ রান করেছিল, কোহলির ৮৯ রানের গতিতে, কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভয়ঙ্কর ব্যাটিংয়ে তাদের মোটের পরিমাণ বামন হয়ে গিয়েছিল। ২০ ওভারের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সাত উইকেটে জিতেছিল।
২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, পাকিস্তান এবং ভারত চ্যাম্পিয়নশিপ খেলায় জায়গা করে নেয়। দুই তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যকার খেলাটি উভয় দেশের দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছিল। তবে জয় পেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ভারতের পরাজয় ছিল জঘন্য।
৫০ ওভার ব্যাট করার পর পাকিস্তানি দল তিন উইকেটে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে। তবে প্রথম ৩১ ওভারেই হেরে যায় ভারতীয় দল। ভারত ১০ উইকেটে ১৫৮ রান করে। ভারতকে ১৮০ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। টুর্নামেন্ট শেষে শেখর ধাওয়ানের রান ছিল সবচেয়ে বেশি।
২০১৯ আইসিসি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে থাকা সত্ত্বেও ভারত চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচ এড়িয়ে গেছে। উদ্বোধনী সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয় বিরাটরা।
কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে আট উইকেটে ২৩৮ রান করে। তবে, ব্যাট করার প্রস্তুতি নিতেই ভারতীয় দলের গতি কমতে শুরু করে। ৫০ ওভারের আগেই ভারত তার সবকটি উইকেট হারিয়ে ফেলে।
ভারতীয় দল ২০২১ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল কিন্তু আরও একবার নিউজিল্যান্ডের কাছে পড়েছিল।
টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। ভারতের ২১৭ রানের তুলনায় প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ২৪৯ রান করেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ১৭০ রান করে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে সহজেই জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার ১২ গ্রুপ পর্ব থেকে ভারত বাদ পড়েছিল।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান। এরপর ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এমন হার মেনে নিতে পারছে না ভারত।
ভারতীয় বোলারদের নিয়ে যে ছেলেখেলা দেখিয়েছে জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। কোনো উইকেট না হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। ৯২ ফাইনাল কথা আরও একবার বিশ্বব্যাপী অবলোকন করবে। ফাইনালে পথে যখন জস বাটলার ও হেলস অবিশ্বাস্য একটি জুটি উপহার দেন ক্রিকেটপ্রেমিকদের অনেকবড় ভালোবাসা ছিনিয়ে নেন। যা অনেক অনেক রেকর্ড তৈরি করেছে আবার পুরাতন রেকর্ডের পাতা উল্টাপাল্টা করে দেয় ইংল্যান্ড। একুই ভেন্যুতে পূর্বেকার জেতার রেকর্ড ১৫৮ অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যেকার ম্যাচ। এতে করে ইংলিশরা তাদের আগের রেকর্ড ভেঙ্গে যায়।
আইসিসি টি-২০ বা যেকোনো ধরনের বড়ধরনের ইভেন্ট এই প্রথমবার গোটা বিশ্বব্যাপী দেখলো ১০ উইকেটে। সর্বশেষ ৭ উইকেটের জয়ের রেকর্ড ছিল। আর এইবার ২৪ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতে যায়। বল হাত রেখে জেতার রেকর্ড অর্জন করলো ইংল্যান্ড যা কখনো কোনো দল আইসিসি যেকোনো টুর্নামেন্ট করে দেখাতে পারে নাই। ২০১০ সালে আরও একটি রেকর্ড ইংলিশদের রয়েছে বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল ম্যাচে ২৪ বল হাতে রেখে জিতেছিল লক্ষ্য ছিল মাত্র ১২৯ রান।
১০ উইকেটে হারের বৃত্ত মধ্যে পড়ে গেল নাকি ভারত। এইবারের চ্যাম্পিয়ান ট্রফি ইংল্যান্ড কাছে ১০ উইকেটে হারের মধ্যে এই ম্যাচ দিয়ে দ্বিতীয়বার দশ উইকেট কৃতিত্ব অর্জন করলো। ইতিহাস এমনভাবে ফিরে আসে যা কখনো ক্রিকেট বিশ্ব দেখেনি ভারত লাস্ট যে দলটি কাছে ১০ উইকেটে হেরেছিল সেই দলটি নাম পাকিস্তান বর্তমানে আইসিসি ট্রফি অন্যতম দাবিদার আবার দ্বিতীয় বার সেমিফাইনালে ১০ উইকেট হার নিশ্চিত করে দিয়ে ট্রফি দাবিদার ইংল্যান্ড। ৯২ বিশ্বকাপে আবার সেই দুইদল মুখোমুখি সেই বার চ্যাম্পিয়ান ছিল পাকিস্তান।
বিশ্বকাপে যে কোনো ধরনের উইকেটে সব থেকে বড় রানের জুটি রেকর্ড অন্যতম দুই কান্ডারি জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। এর আগের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ছিল কুইন্টন ডি কক ও রাইলি রুশো।ক্ষত-বিক্ষত হ্নদয় নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর থেকে বিদায় নিলেও ভারত।
বিঃ দ্রঃ ১৩ নভেম্বর মেলবোর্ন ফিল্ড আম্পয়ার থাকবেন মারাইস ইরাসমাস ও কুমারা ধর্মসেনা। টিভি অ্যাম্পয়ার ক্রিস গাফানি চতুর্থ আম্পায়ার থাকেবে পল রাইফেল।
কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url