অর্ধেকের বেশি ডাক্তার রোগীর স্বাস্থ্যের উন্নতির চেয়ে ওষুধ কোম্পানির উন্নতি জন্য ওষুধ লিখে থাকেন
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিষাদকর গল্প শুনাবো শেষ পর্যন্ত সঙ্গে থাকুন। এই পোস্টে আরও জানতে পারবেন, সাধারণ মানুষ প্রতিকার বা মুক্তি পাবে কিনা, ভালো ডাক্তার ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খুঁজে পাওয়ার উপায়।
আমার চাচাতো ভাই, রাজু, ছোটবেলা থেকেই অসুস্থ থাকত। জ্বর, কাশি, সর্দি – এইসব তার সঙ্গী হয়ে থাকত প্রায় সারা বছর। গ্রামের একজন পরিচিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি রাজুকে কিছু ওষুধ লিখে দিতেন। ওষুধ খাওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি পেলেও তার অসুখ কখনোই সম্পূর্ণভাবে সেরে উঠত না।
একদিন, রাজুর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যাওয়ায় আমরা তাকে ঢাকার একটি বড় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে দেখে। চিকিৎসক রাজুর বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর বলেন, রাজুর শরীরে সংক্রমণ হয়েছে। তিনি রাজুকে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ওষুধ লিখে দেন।
কিন্তু, ওই ওষুধ খাওয়ার পরও রাজুর অবস্থায় কোনো উন্নতি হয়নি। বরং, তার শরীরে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। আমরা আবার সেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাই। তিনি আমাদের বলেন, রাজুর শরীরে ওষুধের প্রতিক্রিয়া হয়েছে। তিনি রাজুকে আরো কিছু নতুন ওষুধ লিখে দেন।
এভাবেই কয়েক বছর ধরে রাজু বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে যাওয়া-আসা করে। কিন্তু তার অবস্থায় কোনো উন্নতি হয়নি। শেষ পর্যন্ত, একজন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক রাজুর রোগের সঠিক কারণ বের করে নেন। তিনি রাজুকে একটি বিশেষ ধরনের চিকিৎসা দেন। সেই চিকিৎসার ফলে রাজু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।
রাজুর ঘটনা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। আমি ভাবতে শুরু করলাম, কিভাবে একজন ডাক্তার রোগীর স্বার্থের চেয়ে কোনো ওষুধ কোম্পানির স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিতে পারেন?
আমি এই বিষয়ে অনেক মানুষের সাথে কথা বলেছি। অনেকেই আমাকে একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, অনেক ডাক্তার রোগীদেরকে অতিরিক্ত ওষুধ লিখে দেন। এমনকি, অনেক সময় তারা এমন কিছু ওষুধ লিখে দেন যার কোনো প্রয়োজনই হয় না।
আমি মনে করি, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে একটি বড় সমস্যা হলো, অনেক ডাক্তার ওষুধ কোম্পানির সাথে জড়িত। তারা ওষুধ কোম্পানি থেকে কমিশন বা অন্যান্য সুবিধা পান। ফলে, তারা রোগীদেরকে এমন ওষুধ লিখে দেন যা ওষুধ কোম্পানি তাদের বলে।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ডাক্তারদের ওষুধ কোম্পানি থেকে কোনো ধরনের কমিশন বা অন্যান্য সুবিধা নেওয়া নিষিদ্ধ করা উচিত। এছাড়া, ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
আমি আশা করি, একদিন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে এমন পরিবর্তন আসবে, যাতে প্রত্যেক রোগী সঠিক চিকিৎসা পেতে পারে।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য কোনো প্রতিকার ব্যবস্থা আছে কিনা
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিকার ব্যবস্থা: একটি বিশ্লেষণ আপনি যে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন, তা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। অনেক সাধারণ মানুষই এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জন্য কী কী প্রতিকার ব্যবস্থা থাকতে পারে, সে বিষয়ে আলোকপাত করা যাক:
ব্যক্তিগত পর্যায়ে:
- বিভিন্ন ডাক্তারের পরামর্শ নিন: একজন ডাক্তারের পরামর্শের উপর নির্ভর না করে, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
- দ্বিতীয় মতামত নিন: প্রথম ডাক্তারের দেওয়া নির্ধারণ সম্পর্কে অন্য একজন ডাক্তারের মতামত নিন।
- ওষুধের উপাদান সম্পর্কে জানুন: যে ওষুধ আপনাকে দেওয়া হচ্ছে, তার উপাদান এবং ব্যবহার সম্পর্কে ভালো করে জানুন।
- অনলাইন তথ্য খুঁজুন: বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট থেকে আপনার রোগ এবং ওষুধ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করুন।
- দ্বিতীয় মতামতের জন্য বিদেশে যান: যদি সম্ভব হয়, দ্বিতীয় মতামতের জন্য বিদেশে যান।
সামাজিক পর্যায়ে:
- সচেতনতা সৃষ্টি: এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়ে আলোচনা করুন।
- সরকারকে চাপ দিন: সরকারকে এই সমস্যা সমাধানে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ দিন।
- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ করুন: যদি কোনো ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তাহলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ করুন।
- স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য নিন: এই ধরনের সংগঠনগুলি আপনাকে পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদান করতে পারে।
সরকারি পর্যায়ে
- কঠোর আইন প্রয়োগ: ডাক্তারদের ওষুধ কোম্পানি থেকে কমিশন নেওয়া নিষিদ্ধ করা এবং এই আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা।
- ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ: ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখা।
- স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নতি: সরকারি হাসপাতালগুলোতে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।
- স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা: স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
মনে রাখবেন:
- এই সমস্যা সমাধানে সবার যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
- স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা আনতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
- সরকার, ডাক্তার, ওষুধ কোম্পানি এবং সাধারণ মানুষ সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
Disclaimer: এই তথ্যগুলি কেবল সাধারণ ধারণা দেওয়ার জন্য। কোনো রোগ বা অসুখের ক্ষেত্রে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আপনার মতামত জানাতে দ্বিধা করবেন না।
আদৌ ডাক্তার না ডাকাত হাত থেকে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি উপায় কি আছে মনে হয় না। আমার ও আপনার উদ্বেগটি সম্পূর্ণ বৈধ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে যেসব সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। ডাক্তারদের একাংশের অসৎ আচরণের কারণে সাধারণ মানুষের ভরসা কমে যাওয়া একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সবার যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু প্রতিকার ব্যবস্থা:
- সচেতনতা বৃদ্ধি: স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মিডিয়া এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রোগ্রামের মাধ্যমে মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা।
- বিভিন্ন ডাক্তারের পরামর্শ: একজন ডাক্তারের পরামর্শের উপর নির্ভর না করে, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
- দ্বিতীয় মতামত: প্রথম ডাক্তারের দেওয়া নির্ধারণ সম্পর্কে অন্য একজন ডাক্তারের মতামত নিন।
- ওষুধের উপাদান সম্পর্কে জানুন: যে ওষুধ আপনাকে দেওয়া হচ্ছে, তার উপাদান এবং ব্যবহার সম্পর্কে ভালো করে জানুন।
- অনলাইন তথ্য খুঁজুন: বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট থেকে আপনার রোগ এবং ওষুধ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করুন।
- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ করুন: যদি কোনো ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তাহলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ করুন।
- স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য নিন: এই ধরনের সংগঠনগুলি আপনাকে পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদান করতে পারে।
সরকারি পর্যায়ে কী করা যেতে পারে
- কঠোর আইন প্রয়োগ: ডাক্তারদের ওষুধ কোম্পানি থেকে কমিশন নেওয়া নিষিদ্ধ করা এবং এই আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা।
- ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ: ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখা।
- স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নতি: সরকারি হাসপাতালগুলোতে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।
- স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা: স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
- চিকিৎসকদের জন্য নৈতিক শিক্ষা: চিকিৎসকদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া যাতে তারা রোগীর স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়।
আমরা সবাই মিলে কী করতে পারি:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করা: এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়ে আলোচনা করুন।
সরকারকে চাপ দিন: সরকারকে এই সমস্যা সমাধানে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ দিন।
স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে সমর্থন করা: এই ধরনের সংগঠনগুলোকে সমর্থন করে তাদের কাজে সহায়তা করা।
মনে রাখবেন:
এই সমস্যা সমাধানে সবার যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা আনতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
সরকার, ডাক্তার, ওষুধ কোম্পানি এবং সাধারণ মানুষ সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
এই সমস্যা সমাধানে সবার যৌথ প্রচেষ্টা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা সবাই মিলে কাজ করলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
আপনার মতামত জানাতে দ্বিধা করবেন না।
তাহলে আপনি কীভাবে ভালো একজন ডাক্তার খুঁজে পাবেন?
যদি আপনি বাংলাদেশে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার খুঁজছেন, তাহলে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
- পরিচিতদের কাছে জিজ্ঞাসা করুন: আপনার পরিবার, বন্ধু বা সহকর্মীদের কাছে জিজ্ঞাসা করুন যে তারা কোন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করান।
- হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ওয়েবসাইট দেখুন: বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ওয়েবসাইটে গিয়ে ডাক্তারদের তালিকা দেখতে পারেন।
- অনলাইন স্বাস্থ্য ফোরাম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করুন: অনেক অনলাইন ফোরাম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষরা বিভিন্ন ডাক্তারের সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে।
- বৈদ্যকিক পরিষদের ওয়েবসাইট দেখুন: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত চিকিৎসকদের তালিকা পাওয়া যেতে পারে।
- স্বাস্থ্য বিমা কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করুন: আপনার স্বাস্থ্য বিমা কোম্পানি আপনাকে নেটওয়ার্কের ডাক্তারদের একটি তালিকা দিতে পারে।
একজন ভালো ডাক্তারের বৈশিষ্ট্য:
- দক্ষতা: ডাক্তারের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা যাচাই করুন।
- সহানুভূতি: একজন ভালো ডাক্তার রোগীর প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন এবং তাদের সমস্যা শুনবেন।
- সময় দেওয়া: ডাক্তারের কাছে আপনার যথেষ্ট সময় থাকবে এবং তিনি আপনার সব প্রশ্নের উত্তর দেবেন।
- স্পষ্ট ব্যাখ্যা: ডাক্তার আপনার রোগের কারণ, চিকিৎসা এবং অন্যান্য বিষয় সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করবেন।
মনে রাখবেন:
- যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কয়েকজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।
- আপনার অন্তর্দৃষ্টিকে বিশ্বাস করুন। যদি কোনো ডাক্তারের সাথে আপনার স্বচ্ছন্দ না হয়, তাহলে অন্য কারো কাছে যান।
আপনার স্বাস্থ্য আপনার হাতে। ভালো একজন ডাক্তার খুঁজে বের করে নিজেকে সুস্থ রাখুন।
আপনি কি আরো কোনো বিষয় জানতে চান?
কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url