আল্লাহ তায়ালা গুণাবলি
আল্লাহ তায়ালা তাঁর অসীম গুণাবলির জন্য পরিচিত। তাঁর গুণাবলির মধ্যে কোনো সঙ্গতি, সীমা বা ত্রুটি নেই, এবং তাঁর গুণাবলির মধ্যে সব কিছু সর্বোত্তম এবং নিখুঁত। কুরআন এবং হাদিসে আল্লাহর বিভিন্ন গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলি উল্লেখ করা হলো:
১. আল-হাই (হয়ত) - জীবিত
আল্লাহ তায়ালা চিরকাল জীবিত, তাঁর কোনো মৃত্যু নেই। তিনি সবকিছু জানেন এবং তাঁর সৃষ্টির উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন।
২. আল-বিদ্বা (শ্রেষ্ঠ)
আল্লাহ তায়ালা সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠ এবং তাঁর কোনো তুলনা নেই। তাঁর গুণাবলি, শক্তি এবং জ্ঞান কোনোভাবেই সীমাবদ্ধ নয়।
৩. আল-আল্লাম (সবকিছু জানেন)
আল্লাহ তায়ালা সর্ব…
আল্লাহ তায়ালা সবকিছুর উপরে, সবকিছুর চেয়ে বড়। তাঁর মহিমা এবং শক্তি সবকিছুর উপরে। ৪. আল-কুদ্দুস (পবিত্র)
আল্লাহ তায়ালা সকল পাপ, ত্রুটি, সীমাবদ্ধতা এবং অপবিত্রতা থেকে পবিত্র। তিনি সকল ধরনের ত্রুটি থেকে মুক্ত।
৫. আল-জাব্বার (অধিকারী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টির উপর পূর্ণ কর্তৃত্ব রাখেন। তিনি ইচ্ছা করলে যে কোনো কিছু পরিবর্তন বা সঠিক করতে পারেন।
৬. আল-রহমান (অতি দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি অসীম দয়ালু। তাঁর রহমত, দয়া ও করুণা সকল সৃষ্টির জন্য অবারিত।
৭. আল-রাহিম (অতি দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর দয়ার পরিধি সীমাহীন। তাঁর বিশেষ দয়া, যা বিশ্বাসীদের জন্য বরাদ্দ, তা সমস্ত পৃথিবী থেকে অনেক বেশি।
৮. আল-আকবার (সবচেয়ে বড়)
আল্লাহ তায়ালা সবকিছুর উপরে, সবকিছুর চেয়ে বড়। তাঁর মহিমা এবং শক্তি সবকিছুর উপরে।
৯. আল-আমান (বিশ্বস্ত)
আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিশ্বস্ত এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি কখনো ভঙ্গ হয় না। তাঁর প্রতি বিশ্বাসী মানুষরা তাঁর সাহায্য ও রক্ষা আশা করতে পারে।
১০. আল-হাকিম (সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়)
আল্লাহ তায়ালা সবকিছু সঠিকভাবে পরিচালনা করেন। তাঁর সিদ্ধান্ত সঠিক, সুবিবেচনাপূর্ণ এবং সর্বোত্তম।
১১. আল-ওয়াদুদ (অতি প্রেমময়)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও স্নেহ রাখেন। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষভাবে দয়ালু এবং প্রেমময়।
১২. আল-লতীফ (অতি সূক্ষ্ম)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তাঁর সৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তাঁর রহমত ও সাহায্য অদৃশ্যভাবে এসে পৌঁছায়।
১৩. আল-ফাত্তাহ (উন্মোচক)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত দ্বার উন্মুক্ত করে দেন, তিনি যেকোনো সমস্যা বা সংকটের সমাধান দান করেন।
১৪. আল-ওহাব (দানকারী)
আল্লাহ তায়ালা অগণিত দানের মালিক এবং তিনি ইচ্ছা করলে যে কাউকে যেকোনো কিছু প্রদান করতে পারেন।
১৫. আল-মুজীব (প্রতিবর্তনকারী)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের দোয়া শুনেন এবং তাদের প্রার্থনা গ্রহণ করেন।
১৬. আল-গাফুর (ক্ষমাশীল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তাঁর বান্দাদের মাফ করে দেন যদি তারা আন্তরিকভাবে তওবা করে।
১৭. আল-খালিক (স্রষ্টা)
আল্লাহ তায়ালা সবকিছুর স্রষ্টা। তিনি পৃথিবী, আকাশ, মানুষ, পশু-পাখি এবং সমস্ত সৃষ্টির মালিক।
১৮. আল-ফাতির (তৈরি করার জন্য সৃষ্টিকারী)
আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির প্রতিটি স্তর ও উপাদান সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি কেবল সৃষ্টিতেই সীমাবদ্ধ নন, বরং তিনি নতুন কিছু সৃষ্টির ক্ষমতাও রাখেন।
১৯. আল-আর রহমান (অনন্ত দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা সকল সৃষ্টির প্রতি অনন্ত দয়ালু, এবং তাঁর দয়ার পরিধি সর্বত্র বিস্তৃত।
২০. আল-জালীল (মহান, গম্ভীর)
এছাড়াও আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য গুণাবলি রয়েছে, যা মানুষের বোধগম্যতার বাইরে। এসব গুণাবলির মধ্যে থেকে আমরা জানি যে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর অসীম ক্ষমতা, দয়া, এবং মহিমায় একমাত্র নির্ধারক।
নিশ্চয়ই, আল্লাহ তায়ালার অসীম গুণাবলির আরও কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া হলো, যেগুলো কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এসব গুণাবলি আমাদের আল্লাহর মহানত্ব, দয়ালুতা, ক্ষমতা এবং পরিপূর্ণতার পরিচয় দেয়।
২১. আল-বাদি' (নতুন সৃষ্টি করার ক্ষমতাশালী)
আল্লাহ তায়ালা নতুন কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন। তিনি কিছু এমনভাবে সৃষ্টি করেন যা আগে কখনো ছিল না। তাঁর সৃষ্টির মধ্যে কোনো তুলনা নেই। (সূরা আল-বাকারা, ২: ১১৭)
২২. আল-ফাতা (মুক্তিদাতা)
আল্লাহ তায়ালা যেকোনো সংকট থেকে মুক্তি দানকারী। তিনি বান্দাদের সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করেন এবং তাদের জন্য পথ খুলে দেন। (সূরা আল-আনফাল, ৮: ۲)
২৩. আল-জামিল (সুন্দর)
আল্লাহ তায়ালা অসীম সুন্দর, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিই সুন্দর এবং নিখুঁত। তাঁর সৌন্দর্য, মহিমা এবং সত্ত্বা কোনোভাবেই মানুষের ধারণা বা বোধগম্যতার বাইরে। (সূরা আল-হাদিদ, ৫৭: ২)
২৪. আল-তাওয়াব (প্রত্যাবর্তনকারী)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন। যদি কোনো বান্দা পাপ থেকে ফিরে আসে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করে, তবে তিনি তা মাফ করে দেন এবং পুনরায় তাঁর রহমত লাভের সুযোগ দেন। (সূরা আত-তাওবা, ৯: ۱۰)
২৫. আল-রশিদ (সোজা পথ প্রদর্শক)
আল্লাহ তায়ালা সঠিক পথের নির্দেশক। তিনি বান্দাদের জন্য সঠিক পথের নির্দেশ দেন, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে এবং সফল হতে পারে। (সূরা আল-ফাতিহা, ১: ৬)
২৬. আল-ওয়ারিস (ঐশ্বর্যের মালিক)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র ঐশ্বর্যের মালিক। পৃথিবী, আকাশ, সমুদ্র এবং সব কিছুই তাঁর। তিনি সব কিছুর মালিক, এবং একমাত্র তাঁরই রাজত্ব রয়েছে। (সূরা মারিয়াম, ১৯: ৪৮)
২৭. আল-হক্ক (সত্য)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র সত্য, তাঁর কথা এবং নির্দেশনা কখনোই মিথ্যা হতে পারে না। (সূরা আল-হাক্কা, ৬৯: ১)
২৮. আল-খালিক (স্রষ্টা)
আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সমস্ত সৃষ্টির মূল স্রষ্টা। (সূরা আল-আল-ইমরান, ৩: ৪৪)
২৯. আল-মাজিদ (অত্যন্ত মহিমান্বিত)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর মহিমায় চিরকাল বিজয়ী এবং তাঁর গুণাবলি অতুলনীয়। তাঁর মহিমা কখনোই শেষ হবে না এবং সবকিছু তাঁর মহিমার প্রতিফলন। (সূরা আল-আল-ইমরান, ৩: ১৮)
৩০. আল-ওয়াসি' (অসীম)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর রহমত, ক্ষমতা, জ্ঞান, এবং দয়ার ক্ষেত্রে অসীম। তাঁর ক্ষমতার কোনো সীমা নেই এবং তিনি সব কিছুতে পূর্ণ। (সূরা আল-বরুজ, ৮৫: ১৫)
৩১. আল-সাবুর (অতিশয় ধৈর্যশীল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ধৈর্যশীল। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অসীম ধৈর্য ধারণ করেন, এবং তাদের তওবা ও অনুশোচনার অপেক্ষা করেন। (সূরা আলে ইমরান, ৩: ১৪৪)
৩২. আল-হালিম (সহিষ্ণু)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত সহিষ্ণু। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি ধৈর্য ধারণ করেন, এবং তারা ভুল করলে তাদের শাস্তি না দিয়ে সুযোগ দেন। (সূরা আল-আনফাল, ৮: ৫)
৩৩. আল-গনি (স্বয়ংসম্পূর্ণ)
আল্লাহ তায়ালা সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাঁর কোনো কিছু বা কাউকে তাঁর প্রয়োজন নেই। তিনি সবকিছুর পরিপূর্ণ মালিক। (সূরা আল-হাদিদ, ৫৭: ২)
৩৪. আল-মুকিত (সবকিছু নিয়ন্ত্রণকারী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি সমস্ত সৃষ্টির জ্ঞান রাখেন এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী রিজিক প্রদান করেন। (সূরা আল-আনফাল, ৮: ১৭)
৩৫. আল-শাকুর (অত্যন্ত কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের ভালো কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করেন। তিনি একটি ছোট সৎ কাজের জন্যও অনেক বড় পুরস্কার দেন। (সূরা আল-ইনশিরাহ, ৯৩: ৫)
৩৬. আল-মুতাকাব্বির (গর্বিত)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র গর্বিত, তিনি কোনো সঙ্গতি বা সমকক্ষের ধারক নন। তাঁর গর্ব কোনো ধরনের অহংকার নয়, বরং তাঁর পরিপূর্ণ মহিমা এবং সৃষ্টির প্রতি নিয়ন্ত্রণের পরিচয়। (সূরা আল-হাদিদ, ৫৭: ২৩)
৩৭. আল-আ'লী (উচ্চ, মহান)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত মহান এবং উচ্চতম। তাঁর কোন তুলনা নেই, এবং তিনি সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৩)
৩৮. আল-ওয়াহিদ (এক)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র এক, তাঁর কোনো সঙ্গী নেই। তিনি একমাত্র সৃষ্টির মালিক এবং একমাত্র আদর্শ। (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
৩৯. আল-আহাদ (একক)
আল্লাহ তায়ালা একক, তাঁর কোনো অংশ বা ভাগ নেই। তাঁর একত্ব এবং অসীম সত্ত্বা কোনোভাবেই বিভক্ত হতে পারে না। (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
৪০. আল-ফাতির (সৃষ্টিকারী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টির স্রষ্টা, তিনি কেবল সৃষ্টির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, বরং নতুন কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতাও রাখেন। (সূরা আল-ফাতির, ৩৫: ১)
এইসব গুণাবলি আমাদের আল্লাহ তায়ালার অপরিসীম ক্ষমতা, মহানত্ব, দয়া, এবং সৃষ্টির প্রতি তাঁর অত্যন্ত সুবিবেচনা ও করুণার পরিচয় দেয়। আল্লাহ তায়ালার গুণাবলির কোনো সীমা নেই, এবং তাঁর সব গুণাবলি একে অপরকে পরিপূরক এবং যুক্তিসঙ্গত। তাঁর গুণাবলি ও সত্ত্বার উপর বিশ্বাস একজন মুসলিমের ঈমানের অন্যতম স্তম্ভ।
আল্লাহ তায়ালার অসীম গুণাবলির আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো, যা কুরআন এবং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এই গুণাবলির মাধ্যমে আমরা আল্লাহর মহানত্ব, ক্ষমতা, দয়া, এবং সৃষ্টির প্রতি তাঁর অনুগ্রহের সম্পর্কে আরও গভীর উপলব্ধি লাভ করতে পারি।
৪১. আল-নূর (আলো)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত আলো এবং সমস্ত অন্ধকারের মালিক। তিনি নিজেই সমস্ত আলো, এবং তাঁর আলো সব কিছু আলোকিত করে। তিনি সৃষ্টির মধ্যে প্রকৃত আলো, যা সমস্ত জীবন্ত ও অজীবন্তকে আলোকিত করে।
- কুরআন: "আল্লাহর আলো যেমন আকাশ এবং পৃথিবীর আলো, তিনি তাঁর বান্দাদের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে পথপ্রদর্শন করেন।" (সূরা আল-নূর, ২৪: ৩৫)
৪২. আল-রাযাক (রিজিক প্রদানকারী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টিকে রিজিক (জীবনধারণের উপকরণ) প্রদান করেন। তাঁর কাছে রিজিকের সমস্ত উৎস রয়েছে, এবং তিনি যাকে খুশি, তাকে তার প্রয়োজন অনুসারে রিজিক দেন।
- কুরআন: "এটি আল্লাহর রহমত, যে তিনি কাউকে রিজিক দেন এবং কাউকে বন্ধ করে রাখেন।" (সূরা আল-আল-ইমরান, ৩: ২৭)
৪৩. আল-আহদ (ঐক্য)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র একক, এবং তাঁর কোনো সঙ্গী নেই। তিনি এক এবং একমাত্র আল্লাহ।
- কুরআন: "তিনি এক, আল্লাহ, যে সমস্ত সৃষ্টির মালিক এবং সৃষ্টির একমাত্র নিয়ন্তা।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
৪৪. আল-সামাদ (অবিনশ্বর, চিরস্থায়ী)
আল্লাহ তায়ালা চিরস্থায়ী, তাঁর কোনো শেষ নেই। তিনি অপরিবর্তনীয় এবং তাঁর সত্ত্বা ও গুণাবলির কোনো অবসান নেই।
কুরআন: "আল্লাহ, তিনি চিরস্থায়ী, অমর, সবকিছুর প্রয়োজন তার কাছে থাকে এবং তিনি সমস্ত সৃষ্টির অধিকারী।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ২)
৪৫. আল-ওহাব (দানকারী)
আল্লাহ তায়ালা নিঃস্বার্থভাবে দান করেন। তিনি যাকে খুশি, তাকে দান করেন। তাঁর দান সর্বশক্তিমানের মতো অসীম, এবং তাঁর দানের কোনো সীমা নেই।
- কুরআন: "আল্লাহ দান করেন এবং তিনি জানেন কে কীভাবে গ্রহণ করবে।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৮)
৪৬. আল-গাফুর (ক্ষমাশীল)
আল্লাহ তায়ালা অসীম ক্ষমাশীল, এবং তিনি নিজের বান্দাদের তওবা গ্রহণ করেন। যারা সৎভাবে তওবা করে, আল্লাহ তাদের পাপ মাফ করে দেন।
- কুরআন: "আমি তোমাদের পাপ ক্ষমা করব যদি তোমরা তওবা করো, কেননা আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।" (সূরা আল-ফুরকান, ২৫: ৭০)
৪৭. আল-শাহীদ (সাক্ষী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত কিছু দেখেন এবং জানেন। তিনি সৃষ্টির একমাত্র সাক্ষী। পৃথিবী ও আকাশের সমস্ত ঘটনা, মানুষ ও জিনদের কার্যকলাপ তিনি প্রত্যক্ষ করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ সাক্ষী, তিনি যা কিছু ঘটে তা দেখেন।" (সূরা আল-নিসা, ৪: ১)
৪৮. আল-খাবির (গোপন বিষয় জানেন)
আল্লাহ তায়ালা সবকিছুর গোপন দিক জানেন, এমনকি আমাদের অন্তরের গোপন ভাবনা ও অনুভূতিগুলোও তিনি জানেন।
- কুরআন: "আল্লাহ জানেন তোমাদের অন্তরের কথা।" (সূরা আল-আহজাব, ৩৩: ৫)
৪৯. আল-তানী (পুনরায় ফেরানো)
আল্লাহ তায়ালা যেকোনো কিছু শুরু করতে পারেন এবং আবার সেটি শেষ করতে পারেন। তিনি সৃষ্টি ও ধ্বংসের ক্ষমতা রাখেন।
কুরআন: "তুমি যদি চাও, আমি তোমাদের সৃষ্টিকে পরিবর্তন করতে পারি, যেভাবে আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি।" (সূরা আল-নূর, ২৪: ৫১)
৫০. আল-রাজ্জাক (অত্যন্ত রিজিক প্রদানকারী)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত কৃপালু এবং তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রদান করেন, যা তাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজন।
- কুরআন: "তিনি রিজিক দেন যার মাধ্যমে পৃথিবী ও আকাশের সমস্ত প্রয়োজন পূর্ণ হয়।" (সূরা আল-জুমার, ৬২: ১১)
৫১. আল-ফেরদুস (সর্বোচ্চ, শ্রেষ্ঠ)
আল্লাহ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ, এবং তাঁর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী বা সমকক্ষ নেই। তিনি অতুলনীয় এবং তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের কোন সীমা নেই।
- কুরআন: "তার মত আর কেউ নেই।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ৪)
৫২. আল-জাব্বার (শক্তিশালী, অপরিবর্তনীয়)
আল্লাহ তায়ালা এমন শক্তিশালী, যাঁর কোনো শক্তির তুলনা হয় না। তিনি তার ইচ্ছা ও সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আনতে পারেন।
- কুরআন: "তিনি যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন এবং যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২৬)
৫৩. আল-হালিম (সহিষ্ণু)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত সহিষ্ণু। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করেন, এবং তাদের পাপ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সময় দেন।
- কুরআন: "তিনি অত্যন্ত সহিষ্ণু এবং দয়া প্রদর্শনকারী।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ১৫)
৫৪. আল-লতীফ (সূক্ষ্ম, কোমল)
;আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত কোমল এবং সূক্ষ্ম। তাঁর রহমত এবং সাহায্য এমনভাবে আসে যা আমাদের চোখের আড়ালে থাকে।
- কুরআন: "তিনি অত্যন্ত কোমল, সূক্ষ্মভাবে সাহায্য প্রদান করেন।" (সূরা আল-আল-ইমরান, ৩: ৩৪)
৫৫. আল-ওয়ালী (অধিকারী, সাহায্যকারী)
;আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রকৃত সাহায্যকারী। তিনি তাদের প্রতিটি প্রয়োজন পূর্ণ করেন এবং তাদের পথপ্রদর্শক।
৫৬. আল-রাহিম (অতি দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত দয়ালু। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মায়াবী এবং দয়ালু, এবং তাদের প্রতি তাঁর রহমত অবিরত বহমান।
- কুরআন: "তিনি অত্যন্ত দয়ালু, তাঁর রহমত অগণিত।" (সূরা আল-ফাতাহ, ৪৮: ২)
৫৭. আল-আমান (বিশ্বস্ত)
আল্লাহ তায়ালা বিশ্বস্ত, তাঁর প্রতিশ্রুতি কখনও ভঙ্গ হয় না। তাঁর উপর বিশ্বাসী ব্যক্তিরা সর্বদা তাঁর সাহায্য ও আশীর্বাদ লাভ করে।
- কুরআন: "আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি বিশ্বস্ত এবং প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেন।" (সূরা আল-বাকারা, ২: ২৮)
আল্লাহ তায়ালার অসীম গুণাবলির তালিকা সত্যিই অসীম। কুরআন এবং হাদিসে আল্লাহ তায়ালার আরও অনেক গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে। নিচে আরও কিছু গুণাবলি উল্লেখ করা হলো যা আল্লাহ তায়ালার মহত্ত্ব, দয়া, ক্ষমতা, জ্ঞান, এবং তাঁর সৃষ্টির প্রতি তাঁর কর্তৃত্বের পরিচয় দেয়।
৫৮. আল-আফু (মাফকারী)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তাঁর বান্দাদের পাপ মাফ করে দেন যদি তারা আন্তরিকভাবে তওবা করে।
- কুরআন: "যে কেউ আল্লাহর কাছে তওবা করে, আল্লাহ তাকে মাফ করবেন।" (সূরা আল-ফুরকান, ২৫: ৭০)
৫৯. আল-হায়ি (লজ্জাশীল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত লজ্জাশীল। তিনি তাঁর বান্দার কাছে বিনয় ও লজ্জা দেখান এবং তাদের দোয়া গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
- হাদিস: "আল্লাহ তায়ালা লজ্জাশীল এবং শ্রদ্ধাশীল।" (সহীহ মুসলিম)
৬০. আল-ফাত্তাহ (উন্মোচক, খোলাকারী)
আল্লাহ তায়ালা যেকোনো বন্ধ দরজা খুলে দেন। তিনি সমস্যা সমাধানে সাহায্য করেন এবং বান্দাদের জন্য পথ সহজ করে দেন।
- কুরআন: "আল্লাহই পথ খোলেন, তিনি যাকে চান।" (সূরা আল-ফাতির, ৩৫: ১)
৬১. আল-মুআজিব (প্রতিবর্তনকারী, গ্রহণকারী)
আল্লাহ তায়ালা বান্দার দোয়া ও প্রার্থনা শুনেন এবং তা কবুল করেন। তিনি সেই প্রার্থনা প্রত্যাখ্যান করেন না যা তাঁর কাছে আন্তরিকভাবে পাঠানো হয়।
- কুরআন: "তুমি তোমাদের প্রভুর কাছে দোয়া করো, নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের দোয়া শোনেন।" (সূরা আল-জুমার, ৬২: ১১)
৬২. আল-আলিম (সর্বজ্ঞ)
আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞ, তাঁর কাছে সমস্ত কিছু সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। তিনি অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে সমস্ত কিছু জানেন।
- কুরআন: "আল্লাহ জানেন তোমাদের চোখের প্রতিটি গোপন কথা এবং হৃদয়ের চিন্তা।" (সূরা গাফির, ৪০: ১৯)
৬৩. আল-ওয়া'হিদ (একক)
আল্লাহ তায়ালা একক, তাঁর কোনো অংশ বা সঙ্গী নেই। তিনি একমাত্র সৃষ্টির মালিক এবং একমাত্র উপাস্য।
- কুরআন: "আল্লাহ এক, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
৬৪. আল-আহাদ (অদ্বিতীয়)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো সঙ্গী, সমকক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
- কুরআন: "আল্লাহ এক, তিনি অদ্বিতীয়।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
৬৫. আল-জালিল (মহান)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত মহান, এবং তাঁর সম্মান ও মহিমা অসীম। তিনি একমাত্র গর্বিত এবং শ্রেষ্ঠ।
- কুরআন: "আল্লাহ মহিমান্বিত, সর্বশক্তিমান।" (সূরা আল-হাদিদ, ৫৭: ১)
৬৬. আল-লাতিফ (সূক্ষ্ম, কোমল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত কোমল এবং সূক্ষ্ম। তিনি সুক্ষ্মভাবে বান্দাদের সাহায্য করেন, যা কখনো চোখে পড়েনা।
- কুরআন: "তিনি অত্যন্ত কোমল, এবং তাঁর সাহায্য সূক্ষ্মভাবে পৌঁছায়।" (সূরা আল-আল-ইমরান, ৩: ৩৪)
৬৭. আল-জাব্বার (প্রবল, শক্তিশালী)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত শক্তিশালী। তিনি যেকোনো পরিস্থিতি বা অবস্থা পরিবর্তন করতে সক্ষম এবং তাঁর ইচ্ছা ছাড়া কোনো কিছু ঘটে না।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা যেকোনো কিছু পরিবর্তন করতে সক্ষম।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২৬)
৬৮. আল-রাহিম (অতি দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত দয়ালু। তাঁর দয়া সমস্ত সৃষ্টির জন্য বিস্তৃত। তিনি নিজের বান্দাদের প্রতি তাঁর দয়ালুতা প্রর্দশিত করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু, এবং তাঁর রহমত অনেক বড়।" (সূরা আল-ফাতাহ, ৪৮: ২)
৬৯. আল-সুবূর (ধৈর্যশীল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ধৈর্যশীল। তিনি বান্দাদের ভুল, দোষ, এবং গাফিলতি দেখতে পারেন, কিন্তু তিনি তাদের শাস্তি দেন না যতক্ষণ না তারা তওবা না করে।
- কুরআন: "আল্লাহ সর্বদা ধৈর্য ধারণ করেন এবং বান্দাদের জন্য সুযোগ দেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ১৫)
৭০. আল-ওয়াদুদ (অত্যন্ত ভালোবাসার অধিকারী)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ভালোবাসার অধিকারী। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অগণিত ভালোবাসা প্রদর্শন করেন এবং তাঁদের প্রতি তাঁর দয়া ও করুণার নিদর্শন প্রদর্শন করেন।
- কুরআন: "তিনি অত্যন্ত প্রেমময়, খুবই দয়ালু।" (সূরা আল-হাদিদ,
৭৩. আল-বাদি' (নতুন সৃষ্টি করার ক্ষমতা)
আল্লাহ তায়ালা এমন একমাত্র স্রষ্টা যিনি নতুন সৃষ্টি করতে পারেন। তিনি সৃষ্টির কোন শেষ বা সীমা জানেন না।
- কুরআন: "আল্লাহ নতুন সৃষ্টির মালিক, তিনি যেকোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৫)
৭৪. আল-রাব্ব (প্রভু, পালক)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রকৃত প্রভু এবং পালনকর্তা। তিনি সকল সৃষ্টির জন্য রিজিক প্রদান করেন, তাদের দেখাশোনা করেন এবং তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টির প্রভু এবং তাদের রিজিক প্রদানকারী।" (সূরা আল-বাকারা, ২: ১৬৫)
৭৫. আল-হাকিম (প্রজ্ঞাময়)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়। তাঁর সিদ্ধান্ত এবং বিধান সবসময় সঠিক এবং সুবিবেচিত।
- কুরআন: "আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং সব কিছু সঠিকভাবে পরিচালনা করেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২)
এছাড়া আল্লাহ তায়ালার আরও অনেক গুণাবলি রয়েছে, যেগুলো কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এগুলো তাঁর অসীম ক্ষমতা, দয়া, রহমত এবং পরিপূর্ণতার পরিচায়ক। আল্লাহর গুণাবলির প্রতি গভীর বিশ্বাস একজন মুসলিমের ঈমানের মূল ভিত্তি এবং এটি তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশনা অনুসরণের জন্য উৎসাহিত করে।
আল্লাহ তায়ালার অসীম গুণাবলির তালিকা কুরআন এবং হাদিসে আরও বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। আমরা তাঁর গুণাবলির মধ্যে অসীম ক্ষমতা, দয়া, করুণা, জ্ঞান, এবং সৃষ্টির প্রতি তাঁর অপরিসীম কর্তৃত্ব খুঁজে পাই। আল্লাহ তায়ালার গুণাবলির আরও কিছু উদাহরণ নিচে তুলে ধরা হলো:
৭৬. আল-জাব্বার (প্রবল, শক্তিশালী, পুনর্গঠনকারী)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তিনি সবকিছুকে পুনর্গঠন করতে সক্ষম। তাঁর শক্তির সামনে সমস্ত শক্তি দুর্বল। তিনি সৃষ্টির মধ্যে এমন পরিবর্তন আনতে পারেন যা মানুষের কল্পনার বাইরে।
- কুরআন: "তিনি যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন এবং যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২৬)
৭৭. আল-খালিক (স্রষ্টা)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টির স্রষ্টা। তিনি পৃথিবী, আকাশ, সমুদ্র, মানুষ, পশু-পাখি, গাছপালা এবং সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।
- কুরআন: "আল্লাহই সৃষ্টির প্রাথমিক স্রষ্টা, এবং তিনি যেকোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৫৪)
৭৮. আল-রাশিদ (পথপ্রদর্শক, সঠিক পথের দিশারী)
আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির সঠিক পথ প্রদর্শনকারী। তিনি মানুষকে সত্য এবং সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করেন।" (সূরা আল-বাকারা, ২: ۲)
৭৯. আল-আফু (ক্ষমাশীল, মাফকারী)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তাঁর বান্দাদের তওবা গ্রহণ করেন এবং তাদের পাপ মাফ করে দেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী এবং অত্যন্ত ক্ষমাশীল।" (সূরা আল-ফুরকান, ২৫: ৭০)
৮০. আল-জালিল (মহান, গম্ভীর)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত মহান। তাঁর মহানত্ব এমন যে, তা সবার কাছেই অগম্য। তিনি সমস্ত সৃষ্টির উপরে তাঁর গম্ভীর ক্ষমতা এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
- কুরআন: "তিনি অত্যন্ত মহান এবং গম্ভীর।" (সূরা আল-হাদিদ, ৫৭: ১)
৮১. আল-সামিদ (স্বাধীন, চিরস্থায়ী)
আল্লাহ তায়ালা সম্পূর্ণ স্বাধীন। তিনি কোনও কিছু বা কাউকে নির্ভরশীল নন। তাঁর অস্তিত্ব অবিনশ্বর এবং চিরস্থায়ী।
- কুরআন: "আল্লাহ চিরস্থায়ী, তিনি স্বাধীন, তাঁর কোনও প্রয়োজন নেই।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ২)
৮২. আল-আলীম (সর্বজ্ঞ, সব জানেন)
আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞ। তাঁর কাছে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সমস্ত ঘটনা পরিষ্কার। তিনি জানেন মানুষের অন্তরের গোপন কথা এবং সৃষ্টির প্রত্যেকটি দিক।
- কুরআন: "আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং তাঁর কাছে সব কিছু পরিষ্কার।" (সূরা আল-আল-ইমরান, ৩: ৬)
৮৩. আল-ওহাব (দানকারী)
আল্লাহ তায়ালা বিনা শর্তে দান করেন। তাঁর দানে কোনো সীমা নেই। তিনি যাকে চান, তাকে দান করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা দানকারী, তিনি যাকে চান, তাকে দান করেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৮)
৮৪. আল-শাহীদ (সাক্ষী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত কিছু দেখেন, শুনেন এবং জানেন। তিনি প্রত্যেকটি কাজের সাক্ষী, এবং তাঁর কোনো কিছুই লুকায়িত থাকে না।
- কুরআন: "আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ের সাক্ষী।" (সূরা আল-নিসা, ৪: ১)
৮৫. আল-হাকীম (প্রজ্ঞাময়, বিচক্ষণ)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান। তাঁর সিদ্ধান্ত এবং বিচার সবসময় সঠিক এবং সুবিবেচনাপূর্ণ।
- কুরআন: "আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং প্রজ্ঞাময়।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২)
৮৬. আল-ওয়াদুদ (অত্যন্ত প্রেমময়)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত প্রেমময়। তাঁর প্রেম এবং দয়া অসীম, এবং তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি সর্বদা ভালোবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শন করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ অত্যন্ত প্রেমময় এবং দয়ালু।" (সূরা আল-হাদিদ, ৫৭: ২)
৮৭. আল-গাফুর (ক্ষমাশীল)
আল্লাহ তায়ালা অসীম ক্ষমাশীল। তিনি তাঁর বান্দাদের তওবা গ্রহণ করেন এবং তাদের পাপ মাফ করে দেন।
- কুরআন: "আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল এবং মাফকারী।" (সূরা আল-ফুরকান, ২৫: ৭০)
৮৮. আল-তাওয়াব (তওবা গ্রহণকারী)
আল্লাহ তায়ালা তওবা গ্রহণকারী। তিনি তাঁর বান্দাদের সৎভাবে তওবা করার পর তাদের পাপ মাফ করে দেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী, তিনি অতীত পাপ মাফ করেন।" (সূরা আল-ফুরকান, ২৫: ৭০)
৮৯. আল-ওয়ালী (সাহায্যকারী, বন্ধু)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের সাহায্যকারী এবং তাঁদের প্রকৃত বন্ধু। তিনি বান্দাদের প্রতি সর্বদা অনুগ্রহ ও সাহায্য প্রদান করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তাঁর বান্দাদের বন্ধু, তিনি তাদের জন্য পথপ্রদর্শক।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৬)
৯০. আল-হায়ি (লজ্জাশীল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত লজ্জাশীল। তিনি তাঁর বান্দাদের দিকে দৃষ্টি প্রদান করেন এবং তাদের অন্তরের গোপন বিষয়ও জানেন।
- হাদিস: "আল্লাহ তায়ালা লজ্জাশীল এবং শ্রদ্ধাশীল।" (সহীহ মুসলিম)
৯১. আল-সাবুর (ধৈর্যশীল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ধৈর্যশীল। তিনি তাঁর বান্দাদের ভুল বা অপরাধের পরও তাদের সুযোগ দেন এবং ধৈর্য ধারণ করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ধৈর্যশীল।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ১৫)
৯২. আল-শাকুর (কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী। তিনি বান্দাদের সৎকর্মের জন্য তাদের পুরস্কৃত করেন, যদিও তাদের কর্ম ছোট হলেও।
- কুরআন: "আল্লাহ কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী, তিনি সৎকর্মের জন্য পুরস্কৃত করেন।" (সূরা আল-ইনশিরাহ, ৯৩: ৫)
৯৩. আল-ফাতির (সৃষ্টিকারী, শুরু করার ক্ষমতা)
আল্লাহ তায়ালা নতুন সৃষ্টির মালিক। তিনি যেকোনো কিছু সৃষ্টির শক্তি রাখেন এবং তিনি সৃষ্টির শুরু করতে সক্ষম।
- কুরআন: "তিনি সৃষ্টির শুরু, এবং যেকোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৫)
৯৪. আল-নূর (আলো)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত পৃথিবী এবং আকাশের আলো। তাঁর আলো অসীম, এবং এটি সবকিছু আলোকিত করে।
- কুরআন: "আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর আলো, তাঁর আলোর মাধ্যমে সমস্ত কিছু আলোকিত হয়।" (সূরা আল-নূর, ২৪: ৩৫)
৯৫. আল-রাহিম (অতি দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা অতি দয়ালু, এবং তাঁর দয়া সমস্ত সৃষ্টির জন্য বিস্তৃত।
- কুরআন: "আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু, তাঁর রহমত অগণিত।" (সূরা আল-ফাতাহ, ৪৮: ২)
৯৬. আল-হালিম (সহিষ্ণু)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত সহিষ্ণু। তিনি তার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল এবং তাদের ভুল শাস্তি দেন না যতক্ষণ না তারা তওবা করে।
- কুরআন: "আল্লাহ অত্যন্ত সহিষ্ণু, তিনি বান্দাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন।" (সূরা আল-আহজাব, ৩৩: ৫)
৯৭. আল-রাব্ব (প্রভু)
আল্লাহ তায়ালা সকল সৃষ্টির প্রকৃত প্রভু এবং পালনকর্তা। তিনি সৃষ্টির জন্য সবকিছু নিশ্চিত করেন এবং তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির রাব্ব।" (সূরা আল-বাকারা, ২: ১৬৫)
এই গুণাবলিগুলি আল্লাহ তায়ালার অসীম ক্ষমতা, দয়া, রহমত, এবং সৃষ্টির প্রতি তাঁর কর্তৃত্বের পরিচয় দেয়। আল্লাহ তায়ালার গুণাবলির প্রতি গভীর বিশ্বাস একজন মুসলিমের ঈমানের মূল ভিত্তি,
আল্লাহ তায়ালার গুণাবলির সংখ্যা এবং তাঁর মহিমার বিস্তৃতি অসীম। কুরআন এবং হাদিসে আল্লাহ তায়ালার আরও অনেক গুণাবলি বর্ণিত রয়েছে, যেগুলি আমাদের ঈমান এবং বিশ্বাসের গভীরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এখানে আরও কিছু গুণাবলির বর্ণনা দেওয়া হলো:
৯৮. আল-খাবির (গোপন বিষয় জানেন)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত গোপন বিষয় জানেন। তিনি মানুষের অন্তরের কথা এবং তাদের গোপন চিন্তা জানেন, যা কেউ প্রকাশ করে না।
- কুরআন: "আল্লাহ জানেন তোমাদের অন্তরের গোপন কথা।" (সূরা আল-আহজাব, ৩৩: ৫)
৯৯. আল-হাক্ক (সত্য)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র সত্য। তাঁর কথাই চূড়ান্ত সত্য, এবং তাঁর সিদ্ধান্তগুলো সঠিক।
- কুরআন: "আল্লাহই সর্বোচ্চ সত্য, তাঁর কথা সবকিছুর উপরে।" (সূরা আল-জুমার, ৬২: ২২)
১০০. আল-আমিন (বিশ্বাসযোগ্য, নির্ভরযোগ্য)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য। তাঁর প্রতিশ্রুতিগুলি কখনো ভঙ্গ হয় না এবং তিনি যা বলেন, তা সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টির প্রতি বিশ্বাসযোগ্য এবং সত্য।" (সূরা আল-ফাতির, ৩৫: ১)
১০১. আল-ওয়াহিদ (একক)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র এক, তাঁর কোনো সঙ্গী, সমকক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তিনি একমাত্র সৃষ্টির মালিক এবং একমাত্র উপাস্য।
- কুরআন: "আল্লাহ এক, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
১০২. আল-আহাদ (অদ্বিতীয়)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো অংশ বা সঙ্গী নেই।
কুরআন: "আল্লাহ এক, তিনি অদ্বিতীয়, তার মত আর কেউ নেই।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
১০৩. আল-ফাতির (তৈরি করার ক্ষমতা)
আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির স্রষ্টা এবং তিনি নতুন কিছু তৈরি করার ক্ষমতা রাখেন।
- কুরআন: "আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির সৃষ্টি করেছেন, এবং তিনি চাইলে নতুন সৃষ্টি করতে পারেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৫)
১০৪. আল-হাকিম (প্রজ্ঞাময়, বিচক্ষণ)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়। তাঁর সিদ্ধান্ত এবং নির্দেশ সবসময় সঠিক এবং সুবিবেচনাপূর্ণ।
- কুরআন: "আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং প্রজ্ঞাময়।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২)
১০৫. আল-জাব্বার (শক্তিশালী, শক্তির অধিকারী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত শক্তির অধিকারী। তাঁর ক্ষমতার সামনে সমস্ত শক্তি দুর্বল।
- কুরআন: "আল্লাহ সর্বশক্তিমান, তিনি ইচ্ছা করলে সবকিছু করতে পারেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২৬)
১০৬. আল-ওয়ালী (সহায়ক, বন্ধু)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের সাহায্যকারী এবং প্রকৃত বন্ধু। তিনি তাদের সমস্ত পরিস্থিতিতে সাহায্য করেন এবং তাদের রক্ষা করেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তাদের বন্ধু, যারা তাঁকে ভয় করে।" (সূরা আল-জুমার, ৬২: ১১)
১০৭. আল-রাজ্জাক (রিজিক প্রদানকারী)
আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টিকে রিজিক (জীবনধারণের উপকরণ) প্রদান করেন। তিনি যাকে চান, তাকে তাঁর প্রয়োজন অনুযায়ী রিজিক দেন।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা রিজিক প্রদানকারী, তিনি যাকে চান, তাকে রিজিক দেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ২৭)
১০৮. আল-ফাতা (প্রথম সৃষ্টিকারী)
আল্লাহ তায়ালা প্রথম সৃষ্টিকারী। তাঁর কোনো পূর্বসূরি বা প্রেরক নেই।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা প্রথম সৃষ্টিকারী, তিনি কোনও সৃষ্টির আগে এসেছেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৫)
১০৯. আল-লাতিফ (সূক্ষ্ম, কোমল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত কোমল, এবং তিনি সুক্ষ্মভাবে বান্দাদের সাহায্য করেন। তাঁর সাহায্য কখনো চোখে পড়ে না, কিন্তু তা ঠিক সময়ে এসে পৌঁছায়।
- কুরআন: "তিনি অত্যন্ত কোমল, এবং তাঁর সাহায্য সূক্ষ্মভাবে পৌঁছায়।" (সূরা আল-আল-ইমরান, ৩: ৩৪)
১১০. আল-শাকুর (কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী)
আল্লাহ তায়ালা সৎকর্মের জন্য কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী। তিনি বান্দার ভালো কাজকে অনেক বেশি পুরস্কৃত করেন, যদিও সেটা ছোটই হোক না কেন।
- কুরআন: "আল্লাহ কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী, তিনি সৎকর্মের জন্য পুরস্কৃত করেন।" (সূরা আল-ইনশিরাহ, ৯৩: ৫)
১১১. আল-সামাদ (স্বাধীন, চিরস্থায়ী)
আল্লাহ তায়ালা স্বাধীন এবং চিরস্থায়ী। তাঁর কোনো শেষ নেই, তিনি অবিনশ্বর।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা চিরস্থায়ী, তিনি সব কিছুর উপরে রয়েছেন।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ২)
১১২. আল-ইলাহ (ঈশ্বর)
আল্লাহ তায়ালা একমাত্র প্রকৃত ঈশ্বর, তাঁর কোনো সঙ্গী নেই। তিনি একমাত্র উপাস্য, এবং তাঁর বাইরে অন্য কেউ উপাসনা করার উপযুক্ত নয়।
- কুরআন: "আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, তিনি একমাত্র ঈশ্বর।" (সূরা আল-ইখলাস, ১: ১)
১১৩. আল-রাহমান (অতি দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা অতি দয়ালু। তাঁর রহমত সমস্ত সৃষ্টির জন্য বিস্তৃত। তিনি সমগ্র বিশ্বকে দয়া প্রদর্শন করেন।
কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা অতি দয়ালু, তাঁর রহমত অগণিত।" (সূরা আল-ফাতাহ, ৪৮: ২)
১১৪. আল-আর রহমান (অসীম দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা অসীম দয়ালু, তিনি কাউকে তাঁর রহমত থেকে বঞ্চিত করেন না, যদি সে সৎভাবে তওবা করে এবং তাঁর কাছে ফিরে আসে।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা অতি দয়ালু, তার রহমত বিস্তৃত, তিনি সবকিছু ক্ষমা করতে পারেন।" (সূরা আল-ফুরকান, ২৫: ৭০)
১১৫. আল-খালিক (স্রষ্টা)
আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির স্রষ্টা। তিনি সমস্ত সৃষ্টির সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর সৃষ্টি অসীম।
- কুরআন: "আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির স্রষ্টা, তিনি সমস্ত কিছুর মালিক।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ৫)
১১৬. আল-সাবুর (ধৈর্যশীল)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ধৈর্যশীল। তিনি তার বান্দাদের ভুল, দোষ এবং গাফিলতি দেখতে পারেন, কিন্তু তিনি তাদের শাস্তি দেন না যতক্ষণ না তারা তওবা না করে।
- কুরআন: "আল্লাহ সর্বদা ধৈর্য ধারণ করেন এবং বান্দাদের জন্য সুযোগ দেন।" (সূরা আল-ইমরান, ৩: ১৫)
১১৭. আল-রাহিম (অতি দয়ালু)
আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত দয়ালু। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মায়াবী এবং দয়ালু, এবং তাদের প্রতি তাঁর রহমত অবিরত বহমান।
এই গুণাবলিগুলি আল্লাহ তায়ালার অসীম ক্ষমতা, দয়া, রহমত, এবং সৃষ্টির প্রতি তাঁর কর্তৃত্বের পরিচয় দেয়। আল্লাহ তায়ালার গুণাবলির প্রতি গভীর বিশ্বাস একজন মুসলিমের ঈমানের মূল ভিত্তি, এবং এসব গুণাবলি আমাদের জীবনকে আলোকিত করতে সহায়তা করে।
কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url