সূরা আল ইখলাস হুকুম, ফজিলত, রহমত, ঘটনা ও আজাব
সূরা আল ইখলাস: হুকুম, ফজিলত, রহমত, ঘটনা ও আজাবের বিবরণ
সূরা আল ইখলাস (১১২তম সূরা) পবিত্র কুরআনের একটি সংক্ষিপ্ত অথবা গভীর তাৎপর্যপূর্ণ সূরা, যা ইসলামের কেন্দ্রীয় বিশ্বাস তাওহিদ (একত্ববাদ) প্রতিষ্ঠা করে। নিম্নে এর হুকুম, ফজিলত, রহমত, সংশ্লিষ্ট ঘটনা ও আজাব সংক্রান্ত দিকগুলো বিশদভাবে আলোচনা করা হলো-
হুকুম (আদেশ ও বিধান)
- তাওহিদের ঘোষণা: এই সূরার মূল হুকুম হলো আল্লাহর একত্ববাদ ঘোষণা করা। সূরাটি প্রত্যাখ্যান করে শিরক বা অংশীবাদ থেকে মুক্ত থাকা প্রতিটি মুমিনের জন্য আবশ্যক।
- নামাজে পাঠ: হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.) নামাজে সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। এটি সুন্নত হিসেবে বিবেচিত এবং নামাজের কেরাতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
- নিয়মিত তিলাওয়াত: বিপদআপদ থেকে রক্ষা পেতে সকালসন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
ফজিলত (মর্যাদা ও প্রতিদান)
- কুরআনের একতৃতীয়াংশের সমতুল্য - রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "সূরা ইখলাস কুরআনের একতৃতীয়াংশের সমান"
- জান্নাতের সুসংবাদ - যে ব্যক্তি এই সূরাকে ভালোবাসে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়। এক সাহাবি নবীজিকে (সা.) বলেছিলেন, "আমি এই সূরাকে ভালোবাসি," উত্তরে নবীজি (সা.) জান্নাতের সুসংবাদ দেন।
- জান্নাতে প্রাসাদ নির্মাণ - ১০ বার পাঠে ১টি, ২০ বার পাঠে ২টি এবং ৩০ বার পাঠে ৩টি প্রাসাদ নির্মিত হয়। নবীজি (সা.) বলেন, "আল্লাহর দান এর চেয়েও প্রশস্ত"।
রহমত ও বরকত
- গুনাহ মাফ - প্রতিদিন ২০০ বার পাঠ করলে ৫০ বছরের গুনাহ মাফ হয় (ঋণ থাকলে তা ব্যতীত)।
- দারিদ্র্য দূরীকরণ - এক ব্যক্তির দারিদ্র্য দূর করতে নবীজি (সা.) তাকে সূরা ইখলাস পাঠের পরামর্শ দিয়েছিলেন, যা কার্যকর হয়েছিল।
- সুরক্ষা - সকালবিকাল সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠে বালামুসিবত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট ঘটনা (শানে নুযূল)
- মুশরিকদের প্রশ্নের জবাব- কুরাইশরা নবীজি (সা.)কে আল্লাহর বংশপরিচয় জিজ্ঞাসা করলে এই সূরা নাজিল হয়। আল্লাহর একত্ব ও অমুখাপেক্ষিতার ঘোষণা দিয়ে তাদের শিরকের ধারণা খণ্ডন করা হয়।
- ইহুদিদের জিজ্ঞাসা- মদিনার ইহুদিরা আল্লাহর গুণাবলী জানতে চাইলে সূরাটি অবতীর্ণ হয়। তারা প্রশ্ন করেছিল, "আল্লাহ কি সোনারূপা দিয়ে তৈরি?"।
- আমের ইবনে তোফায়েলের ঘটনা-আমের নবীজি (সা.)কে আল্লাহর উপাদান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সূরা ইখলাস নাজিল হয়। পরবর্তীতে আমের মহামারীতে মারা যায়।
আজাবের উল্লেখ
- অংশীবাদীদের শাস্তি- সূরা ইখলাসের বার্তা প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য কঠোর শাস্তির উল্লেখ রয়েছে। যেমন, আমের ইবনে তোফায়েল ও আব্বাদ ইবনে রবীয়া বজ্রাঘাত ও মহামারীতে মৃত্যুবরণ করে ।
- ইহুদি ও মুশরিকদের পরিণতি- তাদের শিরকি বিশ্বাসের কারণে দুনিয়া ও আখিরাতে আজাবের কথা কুরআন ও হাদিসে বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে ।
উপসংহার
সূরা ইখলাস ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের ভিত্তি। এর তিলাওয়াত ও আমল ঈমানকে শক্তিশালী করে, আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে এবং দুনিয়াআখিরাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। নবীজি (সা.)এর সুন্নত অনুযায়ী এ সূরার পাঠ ও চর্চা প্রতিটি মুমিনের জন্য অপরিহার্য।
সূরা আল ইখলাস আয়াতের কোন হুকুম, কী ফজিলত,কী রহমত ও বরকত, কোন ঘটনা, কোন আজাবের কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল। এআই ও গুগল সার্চকৃত লিংক পেয়েছি মোট ৩১ (একত্রিশ) লিংক খোঁজ। অতিসংক্ষেপে কয়েকটি লিংক শেয়ার করছি।
কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url