OrdinaryITPostAd

“আল্লাহর সত্তা ও পরিচিতি”

আল্লাহ তায়ালার আরবি নাম কী?

আল্লাহ তায়ালার মূল ও সর্বোচ্চ নাম হলো "الله" (আল্লাহ)। এটি এমন এক নাম, যা কেবলমাত্র একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও উপাস্য আল্লাহর জন্য নির্ধারিত। এই নামের কোনো বহুবচন বা লিঙ্গভেদ নেই, এবং এটি কোনো মানুষের বা অন্য কিছুর নাম হতে পারে না।
“আল্লাহর সত্তা ও পরিচিতি”

‘আল্লাহ’ নামের অর্থ কী?

‘আল্লাহ’ নামের অর্থ হলো—"সর্বশক্তিমান একমাত্র ইলাহ (উপাস্য), যিনি সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিযিকদাতা ও শাসক"।
এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ:

“আল” অর্থ নির্দিষ্টতা,

“ইলাহ” অর্থ পূজ্য বা উপাস্য।
সুতরাং, "আল্লাহ" মানে — একমাত্র সত্য উপাস্য, যার কোনো অংশীদার নেই।

আল্লাহ কয়টি গুণবাচক নাম আছে?

আল্লাহর গুণবাচক নামের সংখ্যা ৯৯টি (যা "আস্মা উল হুসনা" নামে পরিচিত)। হাদীসে এসেছে:
“আল্লাহর নিরানব্বইটি (৯৯টি) নাম আছে, যে কেউ সেগুলো মুখস্থ করবে ও তার উপর আমল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
— (সহীহ বুখারী, হাদিস: ২৭৩৬)

আল্লাহর ৯৯টি নাম কোথায় পাওয়া যায়?

আল্লাহর গুণবাচক ৯৯টি নাম বিভিন্ন সূরা ও আয়াতে বিচ্ছিন্নভাবে কুরআনুল কারীমে পাওয়া যায় এবং কিছু হাদীসে একত্রিতভাবে উল্লিখিত আছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, তিরমিযি শরীফ-এ (হাদিস ৩৫০৭) একসাথে ৯৯টি নাম তালিকাবদ্ধ আছে, যদিও তা সব হাদিস বিশুদ্ধ নয়, তবে নামগুলো কুরআন ও সহীহ হাদিসে প্রমাণিত।

আল্লাহর আরবি নামগুলো কুরআনে কতবার এসেছে?

আল্লাহর নাম "الله" কুরআনে ২,৬৯৯ বার উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, তাঁর বিভিন্ন গুণনামা যেমন — "আর-রহমান", "আর-রহিম", "আল-আলিম", ইত্যাদিও কুরআনে বিভিন্ন জায়গায় এসেছে।
সর্বমোট আল্লাহর গুণনামাগুলো কুরআনে কয়েক হাজার বার এসেছে।

আল্লাহ তায়ালা কেমন সত্তা?

আল্লাহ তায়ালা হলেন অদৃশ্য, একক, চিরঞ্জীব, অসীম জ্ঞান ও শক্তির অধিকারী।
তিনি:

কোনো কিছুর মতো নন,

শরীর, রূপ, সীমাবদ্ধতা মুক্ত,

চিরকাল ছিলেন, চিরকাল থাকবেন,

কোনো সৃষ্টি বা মানুষের ওপর নির্ভরশীল নন।
সূরা শূরা: ১১—
"ليس كمثله شيء وهو السميع البصير"
“তাঁর সদৃশ কিছুই নেই, তিনি শ্রবণকারী, দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।”

আল্লাহর কোনো শরিক আছে কি?

না, আল্লাহর কোনো শরিক (অংশীদার) নেই।
সূরা ইখলাস:
“قل هو الله أحد، الله الصمد، لم يلد ولم يولد، ولم يكن له كفوا أحد”
(বলুন, তিনিই আল্লাহ, একমাত্র। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি। এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।)

আল্লাহ কি জন্মগ্রহণ করেছেন?

না, আল্লাহ কখনো জন্মগ্রহণ করেননি। তিনি সৃষ্ট নন, বরং সৃষ্টিকর্তা।
সূরা ইখলাসে পরিষ্কার বলা হয়েছে:
“لم يولد” — “তিনি জন্মগ্রহণ করেননি”।
তিনি চিরঞ্জীব, চিরকাল আছেন, এবং সময়, স্থান ও জন্ম-মৃত্যুর ঊর্ধ্বে।

আল্লাহ কি কাউকে জন্ম দিয়েছেন?

না, আল্লাহ কাউকে জন্ম দেননি। তিনি পিতা নন।
সূরা ইখলাস:
“لم يلد” — “তিনি কাউকে জন্ম দেননি।”
মানবজাতি বা অন্য কোনো সৃষ্টিকে তিনি সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু জন্ম দেননি।

আল্লাহর রূপ আছে কি?

আল্লাহর কোনো মানবীয় রূপ নেই।
তিনি অদৃশ্য, চক্ষুদৃষ্টির ঊর্ধ্বে। কুরআনে বলা হয়েছে:
"لا تدركه الأبصار وهو يدرك الأبصار"
(চোখ তাঁকে দেখতে পারে না, কিন্তু তিনি সবকিছু দেখেন। – সূরা আন’আম: ১০৩)

তবে কিয়ামতের দিন মুমিনরা জান্নাতে আল্লাহকে দেখবে, এই বিষয়ে হাদিসে প্রমাণ আছে, তবে কিভাবে দেখা যাবে তা অজানা ও তার ব্যাখ্যা মানববুদ্ধির আওতার বাইরে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url